জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় পর্যায়ে জনসচেতনতার বিকল্প নাই

********************************************

মিডিয়ায় চোখ ফেললেই দেখা যায় প্রতিদিন কোন না কোন এলাকা জলাবদ্ধতায় প্লাবিত হচ্ছে। এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে অনেকেই বলেন - এতে মানুষের হাত নেই। নি:সন্দেহে এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। আমার মতে এটা হয়তো আমাদের ইচ্ছা পূরণ করতেই বিধাতা আমাদের শহর-বন্দর প্লাবিত করে নৌকার উপর ভরসা রাখার বাসনাকে পূর্ণ করেছেন। কারণ বিধাতা অনেক সময় মানুষের কায়মনোবাক্যে চাওয়াকে পূরণ করে দেন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ বললেও বেশীভাগ ক্ষেত্রে এই দুর্যোগ সৃস্টি বা ভয়াবহ করে তুলছে জনসেবার নামধারী লোভী ও পিশাচ রাজনৈতিক নেতারা এবং তাদের চামচারা। ৯৯% ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কারণ হচ্ছে - হাওড় ও শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মানে দুর্নীতি, শহরগুলোতে ড্রেনেজ সিস্টেমের প্রবর্তন বা সংস্কার না করা; যদিও এসবের জন্য প্রতিটি সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় প্রতি বছর মোটা অংকের বাজেট ঘোষণা করা হয়। কগজ পত্রে উন্নয়ন হয় কিন্ত বাস্তবে উন্নয়ন হয় না - এর সহজ ব্যাখ্যা হলো টাকাগুলো দুর্নীতিবাজ জনপ্রতিনিধি ও তাদের চক্রের পকেটে চলে যায়। অন্যদিকে এইসব দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক নেতা বা জনপ্রতিনিধিররা বিভিন্ন শহরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত নদী, নালা ও খাল দখল করে বিলীন করে দেওয়ার ফলে সামান্য ঢল বা বৃস্টির পানি নিষ্কাশিত হতে না পারায়ও অনেক শহরে জলাব্দতার সৃষ্টি হচ্ছে।

যদিও ইতোপূর্বে এধরনের আরও কয়েকটি খবর পড়েছি। কিন্তু এটি ৩/৪ দিন আগের খবর। কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীতে পাহাড়ী ঢল নেমে আসায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বেশিরভাগ বাড়ি-ঘর তলিয়ে গেছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম অবৈধভাবে মৎস্য ঘের নির্মাণ করায় এ বন্যা দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
https://goo.gl/7RNw3j

যত জায়গায়ই অবৈধভাবে ভূমি দখল, বাঁধ নির্মাণ বা বাঁধ কেটে ফেলার কারণে ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় মানুষের জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসছে - সবখানেই দেখা যাচ্ছে এসব আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের দুর্নীতি ও কুকর্মের ফল। আমার প্রশ্ন হলো উল্লেখিত ১৮ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় কি আওয়ামীলীগের কোন সত্যিকারের জনদরদী নেতৃবৃন্দ নেই যে, এই একজন দুর্নীতিবাজ উপজেলা চেয়ারম্যানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে দুর্নীতির কবলে দুর্ভোগগ্রস্থ তিন লাখ মানুষের পাশে দাঁড়াতে। অবস্তা দৃস্টে মনে হচ্ছে নাই। কিন্তু কোন সাধারন মানুষ এসবের প্রতিবাদ করলে দেখা যাবে - এই দুর্নীতিবাজ আওয়ামীলীগের নেতার পক্ষে দেশী-বিদেশী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাধারণ মানুষকে গুম, খুন ও নির্যাতন করার জন্য হাজারো চামচা মুহুর্তেই গর্জে উঠবে। আসলে এই সব চামচাদের সমর্থনেই দুর্নীতিবাজরা দুর্ণীতিতে বেপরোয়া হয়ে উঠে - ফলশ্রুতিতে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে বিপর্যস্থ জীবনযাপন করেতে হয় ৩/৪ লাখ বা তারো অধিক সাধারণ মানুষকে।

তাই দুর্নীতিবাজদের চামচাদের উদ্দেশ্যে এটাই বলবো - একটাবার হলেও ভেবে দেখ তুমরা তেমন লাভবান হচ্ছ না, কিন্তু তুমাদের বিবেক আর শক্তিকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে দুচারজন লোভী নেতা বিপন্ন করছে লাখ লাখ মানুষের সুখ-স্বাচ্ছন্দের জীবন। সর্বশেষ বিচারের দিন কিন্তু পাই পাই করে তুমাদেরকেই এর হিসাব দিতে হবে, শাস্তিও পেতে হবে। তাই সময় থাকতে দুর্নীতিবাজদের ছেড়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াও। এটা করতে পারলে দেখবে দেশ ও সমাজে সুখ শান্তি প্রবাহিত হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

পরিশেষে সাধারণ সচেতন মানুষকেও বলতে চাই, জন্মিলে মরিতে হবে - এর কোন ব্যতিক্রম নেই। তাই দুর্নীতিবাজদের কুকর্মের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগের ভয়াবহতায় বিপর্যস্ত হয়ে অনাহারে, অর্ধাহারে, সাপে - জোঁক এর আক্রমনে মৃত্যবরণ করার চেয়ে প্রতিবাদ করে মরা অনেক উত্তম। এতে অন্তত ইতিহাসের খাতায় প্রতিবাদীর তালিকায় নামটা অমর হয়ে থাকবে। তবে সব নির্যাতিত মানুষ একতাবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করলে মরতেও হবে না। যেমন চিন্তা করেন উপরের ঘটনায় বিপর্যস্ত ৩ লাখ মানুষের মাত্র ১০% ও যদি একতাবদ্ধ হয়ে উক্ত আওয়ামীলীগের নেতার অবৈধ ঘের নির্মাণের প্রতিবাদ করে - শুধু জুতাপেটাই করে - তাহলে তার অবস্তা কি হবে? গভীরভাবে চিন্তা করুন বিজয় কার হবে - দুর্নীতিবাজ নেতার নাকি একতাবদ্ধ প্রতিবাদী বিপর্যস্ত জনতার?? সারা দেশের ২/৪টা এলাকায় এভাবে প্রতিবাদ করতে পারলেই সব দুর্নীতিবাজরা সাবুদ হয়ে যেত বলে আমার বিশ্বাস। ফলশ্রুতিতে অনেক বিপন্ন পরিস্থিতি থেকে নিরাপদ থাকতো সাধারণ মানুষের জীবন।

লন্ডন
০৭/০৭/১৭ ইং।


https://www.facebook.com/szmashrafulislam/

এই পেইজ থেকে কপি করা হয়েছে 

Comments

Popular posts from this blog

এমন একটা বন্ধু চাই,